কাশ্মীর নিয়ে আরেক দফা ‘রাজনীতি’

জম্মু ও কাশ্মীর সচরাচর খবর হয়ে ওঠে সহিংসতার কারণে। কিন্তু এবার খবর হলো অহিংস রাজনৈতিক পরিস্থিতিতেই। জম্মু-কাশ্মীরের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে তুমুল বিতর্ক উঠেছে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে। ভারত সরকারের একটা গেজেটকে ঘিরে এ বিতর্ক শুরু। পুরোনো এই ‘রাজ্য’কে ভোটের জন্য নতুন করে পুনর্বিন্যাস করার কথা জানিয়েছে ভারত। কাশ্মীরিরা বলছেন, তাঁদের রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা দমাতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন কৌশল এটা। তাঁদের রাজনৈতিক অধিকার আরেক দফা সংকুচিত হবে এতে।

একটি গেজেট ও কিছু উদ্বেগ

প্রায় সাত দশক ধরে ভারতভুক্ত জম্মু-কাশ্মীর-লাদাখের যে পৃথক মর্যাদা এবং সীমিত সাংবিধানিক স্বায়ত্তশাসন ছিল, তার অবসান ঘটানো হয়েছিল ২০১৯ সালের গ্রীষ্মে। এর পর থেকে জম্মু ও কাশ্মীর ভারতে ‘কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল’ হিসেবে গণ্য হচ্ছে। সে সময় লাদাখকে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে আলাদা করে কেন্দ্রশাসিত পৃথক আরেক এলাকা করা হয়। এতে পুরোনো এই ‘রাজ্য’ অর্ধেকের বেশি এলাকা হারায়; যদিও জনসংখ্যা লাদাখে খুব বেশি নয়।

সম্প্রতি লাদাখহীন জম্মু ও কাশ্মীরের বাকি এলাকায় সম্ভাব্য নির্বাচনের জন্য সীমানা পুনর্নির্ধারণ করিয়েছে নয়াদিল্লি একটি কমিটির মাধ্যমে। সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জনা দেশাইয়ের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের একটি প্যানেল দুই বছর সময় নিয়ে এ কাজ করেছে। কমিটি যে প্রস্তাব তৈরি করে, সেটাই গেজেট আকারে প্রকাশিত হলো মে মাসের প্রথম সপ্তাহে।

রঞ্জনা দেশাইদের প্রস্তাব যে সরকারের ইচ্ছা-অনিচ্ছার সঙ্গে মিল রেখেই এগিয়েছে, সেটা না বললেও চলে। আগে জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভায় জনপ্রতিনিধিদের আসন ছিল ৮৩টি। সরকারি গেজেট অনুযায়ী এখন আসন হয়েছে ৯০টি। তবে এর মধ্যে প্রধান ঘটনা হলো সীমানানির্ধারক কমিটি জম্মুর জন্য আসন রেখেছে ৪৩টি, যা আগে ছিল ৩৭। আর কাশ্মীরে আসন রাখা হয়েছে ৪৭টি, যা আগে ছিল ৪৬। অর্থাৎ জম্মুতে আসন বেড়েছে ৬টি (১৬ শতাংশ), কাশ্মীরে বেড়েছে মাত্র ১টি (২ শতাংশ)। একই সঙ্গে পুরো জম্মু ও কাশ্মীরের পাঁচটি জাতীয়ভিত্তিক লোকসভা আসনকেও এমনভাবে নতুন করে সাজানো হয়েছে, যাতে কাশ্মীরিরা সেখানেও কম সংখ্যায় জিততে পারেন।

শেয়ার করুন: